রাষ্ট্রপতি-মায়ের জন্য ভেষজ চাষি এ বিজ্ঞানী

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)-এর বিজ্ঞানী ছিলেন হরি নাথ। দেশে ফেরার শর্তে আমেরিকার ক্যারোলিনা মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে গবেষণা করতে অনুমতি দেন তৎকালীন ভারতের রাষ্ট্রপতি এপিজে আবুল কালাম। সেখানে গবেষণার ফলে ভুরিভুরি পুরস্কার জুটে তার। কিন্তু কালামের কথা রাখতে ও মায়ের কষ্টে দেশে ফিরেন এ বিজ্ঞানী। কালের পরিক্রমায় তিনি একজন ভেষজ চাষি।

১২ বছর ধরে কাজ করা ডিআরডিও’র বিজ্ঞানী হরি নাথ ক্যারোলিনা মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে গবেষণায় যান। নতুন নতুন ওষুধ তৈরি করে প্রচুর পুরস্কার অর্জন করেন। কিন্তু তার গবেষণার ফল কোনো সাধারণ মানুষ পাচ্ছিল না। নামি-দামি কোম্পানিগুলো তার গবেষণার ফায়দা লুটছিল। এতে তার ধারণা পাল্টে যায়। এরইমধ্যে মায়ের জটিল রোগ হলে চিকিৎসকের কাছে পাঠান। কোনো সঠিক ফলাফল না পাওয়ায় দেশে ফিরে গবেষণা শুরু করেন তিনি।

বিজ্ঞানী হরি নাথ জানান, ২০০৫ সালে রাষ্ট্রপতি দুই বছরের সময় বেধে দিয়ে আমেরিকায় যাওয়ার অনুমতি দেন। সেখানে করা গবেষণা দেশের কাজে লাগাতে বলেন। আমেরিকায় থাকা অবস্থায় মায়ের আর্থারাইটিস আর স্পনডিলাইটিসের অসহ্য যন্ত্রণা বাড়ে। ফোনে তাকে বিষয়টি জানালে চিকিৎসকের কাছে পাঠান হরি নাথ। কিন্তু কোনো উপকার হয়নি। তখন ব্যথায় মা কেঁদে ফেলেছিলেন। আর সেখানে থাকতে পারেননি এ সফল বিজ্ঞানী।

তিনি আরো জানান, জাপানের এক বহু পুরনো বইয়ে ব্যথার উপশম হিসেবে মালিঙ্কা গাছের সন্ধান পান। সেটি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। মাকে মালিঙ্গা গাছের পাতার রস সেবন করানোর পর ইতিবাচক সফলতা পান। এরপর মালিঙ্গা নিয়ে গবেষণা শুরু করেন হরি নাথ। মরিঙ্গার সঙ্গে আরো ভেষজ মিশ্রিত করে মরিঙ্গার পাউডার বানান। আর সেই পাউডার মানুষের মাঝে বিতরণ শুরু করেন। এতে মানুষরাও উপকার পেতে থাকে।

হরি নাথ জানান, সমস্ত গুল্ম থেকে ওষুধ তৈরি হয়। তাহলে দৈনন্দিন খাদ্যভাস ঠিক রাখলেই রোগ মুক্ত থাকা সম্ভব। তাই নিজের জমিতে চাষাবাদ করতে থাকেন ভেষজ গাছ। সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে মরিঙ্গা, আমলকি, কারিপাতা ও মৌসুমী সবজি চাষ করছেন এ বিজ্ঞানী।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর